আব্বু,আমি আর কয়েকটা গল্প
বিশ্ব বাবা দিবস!
😊
ছোট্র একটু গল্প বলি।আমার বয়স যখন মাত্র সাড়ে চার বছর তখন আমি আব্বুর হাত ধরে প্রথম স্কুলে যাই।এতো ছোট্র বাচ্চা পারবে তো!কান্নাকাটি করবে নাতো!এরকম কতো শত প্রশ্নের সাথে আব্বু মোকাবেলা করলো আর আমাকে তারা ছোট্র করে একটা পরীক্ষায় বসিয়ে দিলো।আর পরীক্ষা শেষে কিছুক্ষন পর আব্বু শুনলো তার প্রথম সন্তান এখন থেকে স্কুলে পড়তে পারবে।অনেক ছোটতো তখন,তাই খুব বেশি স্মৃতি আঁকড়ে রাখতে পারিনি।হালকা ভাসা ভাসা স্মৃতিতেই যা মনে পরে আমার।আর সেই ভাসা স্মৃতি কল্পনা করেই বলি আনিও যেন আমার আব্বুর মতো এরকম একটা স্পেশাল দিবস একদিন আমার সন্তানকে দিতে পারি।
ছোট্র একটু গল্প বলি।আমার বয়স যখন মাত্র সাড়ে চার বছর তখন আমি আব্বুর হাত ধরে প্রথম স্কুলে যাই।এতো ছোট্র বাচ্চা পারবে তো!কান্নাকাটি করবে নাতো!এরকম কতো শত প্রশ্নের সাথে আব্বু মোকাবেলা করলো আর আমাকে তারা ছোট্র করে একটা পরীক্ষায় বসিয়ে দিলো।আর পরীক্ষা শেষে কিছুক্ষন পর আব্বু শুনলো তার প্রথম সন্তান এখন থেকে স্কুলে পড়তে পারবে।অনেক ছোটতো তখন,তাই খুব বেশি স্মৃতি আঁকড়ে রাখতে পারিনি।হালকা ভাসা ভাসা স্মৃতিতেই যা মনে পরে আমার।আর সেই ভাসা স্মৃতি কল্পনা করেই বলি আনিও যেন আমার আব্বুর মতো এরকম একটা স্পেশাল দিবস একদিন আমার সন্তানকে দিতে পারি।
আমার বয়স চার বছর যখন তখন আব্বুর একটা অপারেশন লাগবে।আমরা তখন বরিশালে থাকি।আম্মু,ফুপাতো বোনের সাথে সকাল সকাল আব্বুকে দেখতে গেলাম।দেখলাম আব্বুর পেটে একটা পাইপ।তখন আমি ওসব বুঝি না যে ওটা প্রসাবের জন্য,তবে বুঝি আমার আব্বুর মনে হয় অনেক কষ্ট হচ্ছে।আমি কোনো দুষ্টামি করছি না,চুপচাপ আব্বুর পাশে বসে।আব্বু বিছানায় বসা অবস্থায়ই কোলে নিয়ে আম্মুকে জিজ্ঞাসা করতেছে "সকালে কি খাইছে ও?
কিছুক্ষন পরেই একজন নার্স ঢুকলো আর ভিজিটর সবাইকে বেড় করে দিলো।ধীরে ধীরে আমি আর আম্মুও বাইরে চলে এলাম।নার্স গেটটা বন্ধ করে দিচ্ছে....।যতক্ষন না পুরোপুরি বন্ধ হলো আমি আর আব্বু দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আর আব্বু হাস্যজ্বল মুখে আমার দিকে তাকিয়ে ইশারায় কিছু একটা বোঝাচ্ছে।
সাল ২০১৬ এর জানুয়ারি আব্বু ক'দিন আগে হার্ট এট্যাক করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি।আমি বরিশাল থেকে ভোর বেলা এসে কিছুক্ষন পরেই হাসপাতালের উদ্দেশে যাচ্ছি।গার্ড আমাকে অপরিচিত দেখে ঢুকতে দিচ্ছে না।হঠাত চোখ দুটা ছল ছল করতে শুর্য করলো,আমি বললাম আমার আব্বুর সাথে দেখা করতে আসছি উনি অসুস্থ হবার পর এখন পর্যন্ত আমি দেখা করতে পারিনি।গার্ড এর মনেও মনে হয় মায়া হলো তাই সুন্দর করে বললো যাও বাবা।ভেতরে ঢুকেই দূর থেকে দেখি সাদা বিছানার বেডে শুয়ে হাসপাতালের দেয়া শার্ট পরে।আমি একটু ঢুকতেই আব্বুও আমাকে দেখলো, তড়িৎ সামনে গিয়েই আব্বুকে জড়িয়ে ধরলাম আর কাঁদতে শুরু করলাম।আব্বু বলছে -"আরে বোকা নাকি! কান্নার কি আছে? আমিতো পুরাপুরি সুস্থই এখন।"
২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে আব্বু এতো অসুস্থ হয়ে পরলো যেন ২ মিনিটের জন্য নিঃশ্বাসও ছিলো না।দোড়ে পানি আনতে গেলাম মাথায় দেয়ার জন্য।আমি বুঝতে পারছি আব্বু আর নেই,আবার মনে মনে বলি আল্লাহ এবারের মতো মাফ করে দাও, ক্ষমা করে দাও।পানি নিয়ে কাছে আসতেই দেখি চোখ মেললো।আবার হাসপাতালে ছোটা,এমার্জেন্সিতে রাখার পর লিফট দিয়ে উপরে নেবার সময় আবার অসুস্থ অবস্থায় ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া।খুব অসহায় হয়ে গেছিলাম ওদিন।সাধারণত হার্ট ফাউন্ডেশনে রোগীর সাথে লোক থাকতে দেয় না।তবে সেদিন আব্বুর অবস্থা এতো খারাপ ছিলো যে আমাকে সাথে থাকতে দেয়া হলো।আব্বু উপরে বেডে শুয়ে আর আমি নিচে মেঝতে বসে আব্বুর দিকে তাকিয়েই আছি আব্বু বললো-"ঘুমাও না ক্যান? এখন তো সুস্থই।" অথচ প্রায় ৩ দিন পর আব্বু একটু সুস্থ হতে শুরু করলো মাত্র।একদিন বিকালে হঠাত করে বেডে শুয়েই বললো-"একটু আমড়া আনতে পারবি?"
আমিঃহুম,নিচেই দেখছি
আব্বুঃ একটু বেশি লবন দিয়া আনিস।
আমিঃদেখলাম কাসুন্দিও আছে।বানাইয়া আনি?
আব্বুঃতাইলে তো আরো ভালো হয়।
ছোট গল্পটা অনেক বড় করে ফেলছি, আরো অনেক লিখতে মন চাচ্ছে অবশ্য।আসলে হারাবার ভয় গুলোই অনেক আতঙ্কিত করে দেয়। আব্বুর অনেক অবাধ্য হয়েছি আবার আব্বুও আমার অনেক ইচ্ছাকে পথহারা করে দিয়েছে তবুও দিন শেষে বাবা-ছেলে ভালবাসা সেই একই রয়েছে আর থাকবে।একদম সুউচ্চ মর্যাদায়.....। 😊
আই লাভ ইউ আব্বু
আই লাভ ইউ আব্বু
Comments
Post a Comment